রূপক আইচ, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
দেখে এলাম দাসিয়ারছড়া। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ১৮) কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার আধুনালুপ্ত এই ছিটমহলে বেড়াতে গিয়েছিলাম।  দেখা মিলল আধুনিক সময়ে দীর্ঘ দাসত্ব থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত এ অঞ্চলের অসংখ্য মানুষের সাথে।উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে নীলকমল নদীর দ্বারা বিচ্ছিন এই জনপদে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। ২০১৫ সালের ১লা আগস্ট বাংলাদেশী হিসাবে স্বীকৃতি লাভের পর  ব্যাপক  উন্নয়ন হয়েছে দাসিয়ার ছড়ায়। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের সাথে সাথে বিদ্যূৎ সংয়োগ, পাকা রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ডিজিটাল সেন্টার,পুলিশ ফাঁড়ী, কমিউনিটি সেন্টার,বিশুদ্ধ পানির নলকুপ,স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা, মসজিদ, মন্দির এবং সর্বশেষ স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র সহ অনেককিছু পেয়েছেন এখানকার বঞ্চিত জনগণ।

দাসিয়ারছড়ার ১৩টি গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি। এখানে গিয়ে দেখা গেল সম্প্রতি সময়ে এখানে তৈরী হয়েছে বহু রাস্তা। যা এখানকার মানুষের মধ্যে এনেছে গতি।তৈরী হয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নানাবিধা উন্নয়ন কর্মকান্ডে এলাকার মানুষের মুখে আনন্দের হাসি।

এখানকার অন্যতম বৈশিষ্ট চোখে পড়লো মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাই সাইকেল চালানো। অধিকাংশ মেয়েই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছে বাই সাইকেল চালিয়ে । সোমা ও আয়শা নামে  এখানকার দুই স্কুল ছাত্রী জানালেন-  ছিটের জীবন শেষে বাংলাদেশের মধ্যে আসার পর এখন আমরা স্বাধীনতার সুখ উদযাপন করছি। এলাকায় রাস্তাঘাট তৈরী হওয়ার পর  আমরা সাইকেল কিনেছি। এ বাই সাইকেল নিয়েই আমরা স্কুল কিংবা মাদ্রাসায় যাতায়াত করি। এখন আমাদের খুব আনন্দ। 20180226_170715

দাসিয়ার ছড়ার কৃষক আবুল মোমেন, মোতালেব ব্যাপারীসহ একাধিক কৃষক জানান- ছিটমহলের বাসিন্দা থাকাকালীন সময়ে আমরা কোন দেশের রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা পেতাম না। মানবেতর জীবন যাপন করতে হতো আমাদের। এখন আমরা বাংলাদেশ সরকারের আওতায় নানা সুযোগ সুবিধা পেয়ে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারছি। 20180226_171131

এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবেন চন্দ্র ওরাও জানান- সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের মানুষের উন্নয়নের জন্য সরকারিভাবে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নেয়া হয়েছে। এখানকার প্রতিটি মেয়ে যেন স্কুলে যায় সেজন্য তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে বাই সাইকেল দেয়ার কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। এছাড়া চলছে শিক্ষা স্বাস্থ্য উন্নয়নে বহুমুখি উন্নয়ন কর্মকান্ড।

মাগুরা/ ২৮ ফেব্রুয়ারী ১৮