অনলাইন ডেস্ক, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জেলা প্রশাসকের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান উন্নয়নে জনস্বার্থে নিম্নোক্ত পরিকল্পনা প্রণয়নের কথা জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন অভিভাবক ও সুধি মহল। এ প্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপগুলি সচেতন মহলে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। পদক্ষেগুলি নিম্নরুপ:

১। বিদ্যালয় চলাকালে কোন শিক্ষক বিদ্যালয় পরিত্যাগ করবেন না।

২। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক দিয়ে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে (বিশেষ করে ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের ক্ষেত্রে)।

৩। যে সকল শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ একই শ্রেণিতে শ্রেণি শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তাদেরকে পরিবর্তন করে অন্য শিক্ষকদের দ্বারা শ্রেণি শিক্ষকের দায়িত্ব দিতে হবে। কোন শিক্ষককে এক বছরের বেশী একই শ্রেণির শ্রেণি শিক্ষক না রাখার সুপারিশ করা হলো।

৪। কোন শিক্ষক ছাত্রী-ছাত্রদের কাছ থেকে তাদের শিক্ষাবর্ষ চলাকালীন সময়ে কোন উপহার সামগ্রী নিতে পারবেন না অথবা অভিভাবকের নিকট থেকে উপহার সামগ্রী গ্রহণ করতে পারবে না।

৫। কোন প্রকার গাইড বই এবং নোট বই ব্যবহার করা যাবে না। NCTB কর্তৃক প্রদত্ত পাঠ্যবই ব্যতিত অন্য কোন বই অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।

৬। দিবা শিফটের সকল শিক্ষকবৃন্দ প্রভাতী শিফটে এবং প্রভাতী শিফটের সকল শিক্ষকবৃন্দ দিবা শিফটের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি এক বছর পর পর শিফট পরিবর্তনের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হলো। নির্বাহী আদেশে এই নিয়মের পরিবর্তন হতে পারে।

৭। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার খাতার কোড দেওয়া ও মূল্যায়নে শিফট পরিবর্তন করার সুপারিশ করা হলো।

৮। পরীক্ষায় নকল করা ও ফেল করা ছাত্রদের প্রমোশন না দেওয়ার সুপারিশ করা হলো।

৯। সকল শিক্ষকবৃন্দকে আবশ্যিকভাবে যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকতে হবে।

১০। বিদ্যালয় চলাকালীন সময় কোন শিক্ষক কর্মস্থলের বাহিরে যেতে হলে আবশ্যিকভাবে মুভমেন্ট রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং প্রধান শিক্ষককে অবহিত করতে হবে।

১১। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ এর অনুচ্ছেদ-৩ এর বিধি অনুসরণ করে কোচিং, প্রাইভেট এবং অতিরিক্ত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। কোন শিক্ষক নিয়ম বহির্ভূত কোন কার্যক্রমে জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হবে।

[বিধি-৩। কোন শিক্ষক তার নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে দৈনিক বা প্রতিদিন অন্য যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সীমিত সংখ্যক {১০ (দশ) জনের বেশী নয়} শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে লিখিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীর তালিকা (রোল, শ্রেণী উল্লেখসহ) জানাতে হবে। ]

১২। সকল শিক্ষকবৃন্দকে আগামী দুই মাসের মধ্যে ল্যাপটপ ক্রয় করতে হবে।

১৩। ছাত্রদের বেতন ও অন্যান্য ফি অনলাইনে গ্রহণ করতে হবে।

১৪। সকল শ্রেণিকক্ষ সিসি ক্যামেরার আওতায় অনতে হবে।

১৫। আগামী ১ (এক) সপ্তাহের মধ্যে ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র স্থাপন করতে হবে।

১৬। আবশ্যিকভাবে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম
পরিচালনা করতে হবে এবং ক্লাস রুটিনে ক্লাসটি চিহ্নিত করতে হবে এবং প্রতি সপ্তাহে প্রত্যেক শিক্ষককে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে কমপক্ষে ২টি ক্লাস নিতে হবে।

১৭। ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরী করে শিক্ষক বাতায়নে আপলোড করতে হবে।

১৮। আগামী এক মাসের মধ্যে ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব স্থাপন করতে হবে।

১৯। ইংরেজি ভাষা শিক্ষার জন্য প্রতিদিন ইংলিশ গ্রামার এর উপর বিশেষ ক্লাস নিতে হবে।

২০। গণিত বিষয়ে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

২১। প্রতিবছর শ্রেণী শিক্ষক পরিবর্তন করতে হবে।

২২। স্কুলে আবশ্যিকভাবে স্কাউট কার্যক্রম জোরদার ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।

২৩। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভাগীয় প্রধানগণ আকস্মিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন ও প্রতিবেদন প্রদান করবেন।

মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদ্বয়কে উপরোক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামী ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে এ কার্যালয়ে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়গুলি নিশ্চিত করা গেলে এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান দৃশ্যমান উন্নয়ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ঠরা।

মাগুরা/ ৪ জানুয়ারী ১৭