বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মাগুরায় ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার ৫ বছর পরও শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গীর মোড়ে পৌরসভার মালিকানাধীন চৌরঙ্গী  মার্কেটে অন্তত ২শ ব্যবসায়ী ও কর্মচারি জীবনের ঝুকি নিয়েই কাজ করছেন। সর্বশেষ গত শনিবার বিকেলে হঠাৎ করে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছাদ ও কার্নিশের একটি বড় অংশ ভেঙ্গে পড়ে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে আতংক দেখা দিয়েছে। ভবনটি ধসে যে কোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
পৌরসভা থেকে একটি নোটিশ টানিয়ে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঝুঁকি মুক্ত করতে কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি।
পৌরসভা অফিস সূত্র জানায়, ১৯৯৪ সালে পৌর কর্তৃপক্ষ মাগুরা শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় তিন তলা বাণিজ্যিক ভবনটি নির্মাণ করে। তখন থেকে  ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় পঞ্চাশের বেশী ব্যবসায়ী দোকান বরাদ্দ নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন তাদের অফিস স্থাপন করেছে।
চৌরঙ্গী পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান,  মিথুন শেখসহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, মার্কেটটির নির্মাণ ত্রুটি, নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া, সিমেন্ট ও রড ব্যাহারের কারণে দুই দশক যেতে না যেতেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নির্মাণের ৫-৬ বছরের মাথায় ভবনের মূল আরসিসি কলাম, ছাদ ও সিঁড়ির বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক ফাটল দেখা  দেয়। ছাদসহ অধিকাংশ জায়গা থেকে বালু, খোয়া ভেঙে পড়তে থাকে। প্লাস্টার ভেঙে পড়ে কয়েকজনের আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। মিথুন শেখ বলেন, বিষয়টি তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে বার বার জানালেও কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে তারা ব্যবসা করছেন। এ অবস্থায় চলতে থাকলে ভূমিকম্প কিংবা ভূমিকম্প না হলেও ভবন ধসে প্রাণহানির আশংকা করছেন তারা। ভবনের তৃর্তীয় তলায় সংগঠনের অফিস কক্ষে জেলা বণিক সমিতির আহবায়ক মুন্সি হুমায়ন কবীর রাজা বলেন,  নির্মাণের পর ২০ বছর পার হলেও জরাজীর্ণ ভবনটিতে কোন মেরামত করা হয়নি। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ৬০টি প্রতিষ্ঠানে ২ শতাধিক মানুষ এক মার্কেটে কাজ করেন। তিনি ব্যবসায়ী ও কর্মচারিদের জীবন বাঁচাতে পৌর মেয়রের কাছে এ বিয়য়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।Magura Jhuki Purno Pouro Market Pic 2
এ ভবনের তৃতীয় তলায় জেলা জাসদের কার্যালয় রয়েছে। তারা সেখানে ঝুঁকি নিয়ে তারা অফিস করছেন।  জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক সমীর চক্রবর্তী বলেন, সামর্থ্য না থাকায় মৃত্যুর মাথায় করে তারা সেখানে অফিস করছেন। ছাত্রলীগ এখানকার অফিস ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেছে।
মাগুরা পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম হিরক বলেন, ২০১৩ সাল থেকে তিন দফায় পৌর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের ঝুঁকিপূর্ণ এ মাকের্টটি ব্যবহার না করার জন্য নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ী বা ব্যবহারকারীরা বিষয়টি আমলে নেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল জানান,  ঝুঁকিপূর্ণ মাকের্টগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

মাগুরা / ২৩ জুলাই ১৭