বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরাবার্তা
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সরইনগর-খোর্দ্দরহুয়া গ্রামে পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে গত দু’দিন ধরে চলা দু’দল গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত খোর্দ্দরহুয়া গ্রামের আলাউদ্দিন ফকির (৫৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মঙ্গলবার দুপুরে মারা গেছেন। আহতদের মধ্যে শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আবু বক্কার মোল্যা (৫০), আকিদুল ইসলাম (৩০), আতিয়ার খাঁ (৪০), সাব্বির মোল্যা (৩০), সাদ্দাম হোসেন (৩০), কাকলী বেগম (২৫), রেহেনা বেগম (২৫), গোলাম রসুল মোল্যা (৬৩), ওসমান গনি মিয়া (১৮) ও আবু তাহের মোল্যা (৩০) কে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল ও কয়েকজনকে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে আনছার আলী মোল্যা, সাজ্জাদ শেখ, পান্নু লস্কর, মনিরুল লস্কর, ওয়াজেদ লস্কর, বাবলু ফকির, গেন্দা শেখ, রশিদ মোল্যা, সিদ্দিক কাজী, নাজমুল হোসেন, মোহন মোল্যার দোকান, এনামুলের দোকানসহ ২৫টি বাড়ি-ঘর-দোকান ভাংচুুর ও লুটপাট হয়েছে। এলাকা থেকে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রামবাসী জানায়, সামাজিক ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে শ্রীকোল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম মোল্যা ও বর্তমান ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান বক্কার মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই ধরাবাহিকতায় বৈদ্যুতিক মিটার ভাঙার ঘটনায় সরইনগর গ্রামের কিছু যুবক রবিবার রাতে বক্কার মেম্বারের নামে গালিগালাজ করে। এতে অপমান বোধ করে তিনি নিজ গ্রাম খোর্দ্দরহুয়া গিয়ে শতাধিক লোক নিয়ে সরইনগর আসেন। তারা গোলাম রসুল মোল্যার বাড়ির বৈদ্যুতিক মিটার ভেঙে ফেলে ও দোকান ভাংচুর করে। প্রতিবাদ করতে গেলে মেম্বারের লোকজন গোলাম রসুল মোল্যাকে মারধর করে। সোমবার বিকেলে কাজী বাড়ি মোড়ে ইউপি সদস্য বক্কার মোল্যাকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এদিকে আলাউদ্দিন ফকিরের মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সেইসঙ্গে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুুটপাটের আশঙ্কায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সংঘর্র্ষে জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটকের পর কোর্টে পাঠানো হয়েছে। মার্ডার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রূপক / মাগুরা/১২ জুলাই ২২